হোটেল, রেষ্টুরেন্ট, ক্লাবের জন্য বার লাইসেন্স | মদ বিক্রির লাইসেন্স | মদের বার লাইসেন্স করার নিয়ম | How to get bar license for hotel, restaurant, club

Header Ads Widget

Latest

6/recent/ticker-posts

হোটেল, রেষ্টুরেন্ট, ক্লাবের জন্য বার লাইসেন্স | মদ বিক্রির লাইসেন্স | মদের বার লাইসেন্স করার নিয়ম | How to get bar license for hotel, restaurant, club


 মদ পানের পারমিট পাওয়ার মত একটা বারে মদ বিক্রির লাইসেন্স পাওয়া এতটা সহজ না। একটা মদের বার বা এ্যলকোহল বিক্রির অনুমোদন পাওয়ার আবেদনের অনেকগুলো ধাপ রয়েছে, অনেক ধরনের কাগজপত্র প্রয়োজন হয়। পুরো প্রক্রিয়াটি ধাপে ধাপে এই ভিডিওতে আলচনা করব, আর সম্পূর্ণ বিষয়টি সম্পর্কে একটা সঠিক ধারণা পেতে চাইলে, এই লেখাটি সম্পূর্ণ দেখুন।

বারের লাইসেন্স পাওয়ার জন্য প্রথমে আপনাকে সংশ্লিষ্ট সকল কাগজ-পত্র রেডি করতে হবে। কি কি ডকুমেন্টস্‌ দরকার হবে, সে বিষয়ে পরে আসছি। কাগজপত্র রেডি করার পর, নির্ধারিত ফর্মে অথবা প্রাতিষ্ঠানিক প্যাডে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বরাবর প্রধান কার্যালয়ে আবেদন করতে হবে। আবেদন জমা দেওয়ার পর মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের sub-circle office বা উপ-আঞ্চলিক কার্যালয় একটা তদন্ত করবেন, তদন্ত করার পর আঞ্চলিক কার্যলয়ের মাধ্যমে তদন্ত রিপোর্ট টি মাদক-দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের মহা পরিচালকের নিকট প্রেরণ করবেন। এর পর প্রশাসন অধিশাখা এই রিপোর্ট টি যাচাই-বাচাই করে কোন আপত্তি না থাকলে, লাইসেন্সের প্রদানের অনুমোদনের জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ে পাঠাবেন। অনুমোদন পাওয়া গেলে উপ-অঞ্চলে লাইসেন্স প্রদানের বিষয়ে পত্র প্রেরণ করে আবেদনকারীকে জানানো হয়। লাইসেন্স পেতে সর্বোচ্চ ১২০ সময় লাগে।

লাইসেন্স এর ফিঃ এখানে ফি টা প্রতিষ্ঠান অনুযায়ী ভ্যারি করে, সর্বোনিন্ম ১০ হাজার টাকা এবং সর্বোচ্চ ১ লাখ টাকা।

 

আপনি যদি কোন ক্লাবের জন্য বারের লাইসেন্স নিতে চান, তাহলে ফি হচ্ছে- ১ লক্ষ টাকা, হোটেল বা রেস্টুরেন্টের ক্ষেত্রে এটা পৌর বা ব্যয়বহুল এলাকায় অবস্থিত হলে ৫০ হাজার টাকা এবং অন্যান্ন এলাকার ক্ষেত্রে ১০ হাজার টাকা। এবং ৫০ হাজার টাকা লেট ক্লোজিং ফি। এই ফি এর টাকা ট্রেজারি চালানের মাধ্যমে জমা দিতে হবে।

এবার আসি লাইসেন্স এর আবেদনের জন্য আপনার কি কি ডকুমেন্টস্‌ দরকার হবে-

  • সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান কর্তৃক নির্ধারিত ফরমে/প্রতিষ্ঠানটির প্যাডে আবেদন
  • আবেদনকারীর জাতীয় পরিচয়পত্র অথবা পাসপোর্টের ১ম ৪ পৃষ্ঠার সত্যায়িত অনুলিপি
  • দুকপি পাসপোর্ট সাইজের ছবি
  • যে ভবনে/ঘরে প্রতিষ্ঠানটি অবস্থিত তার মালিকানার স্বপক্ষে সর্বশেষ প্রচারিত খতিয়ান।
  • ক্রয়কৃত সম্পত্তি হলে মূল ক্রয় দলিলের অনুলিপি, নামজারি খতিয়ানের কপি এবং হালসন পর্যন্ত ভূমি উন্নয়ন কর পরিশোধের দাখিলার কপি
  • ভাড়া ভবনে অবস্থিত হলে বাড়িভাড়া্র চুক্তিপত্র এবং সর্বশেষ ভাড়া পরিশোধের রশিদ
  • প্রতিষ্ঠানটির হালনাগাদ ট্রেড লাইসেন্স (যদি থাকে)
  • গোডাউনের খসড়া মানচিত্র (যদি থাকে)
  • একটি বারের জন্য বার এর নাম, ঠিকানা, অবস্থান-সংবলিত শিরোনাম এবং আবেদনকারীর নাম, সিলমোহর ও স্বাক্ষরযুক্ত ৩ কপি খসড়া মানচিত্র
  • প্রতিষ্ঠানটির হালনাগাদ আয়কর প্রত্যয়নপত্র
  • বিগত করবর্ষের আয়কর সনদ
  • প্রতিষ্ঠানটির জমির দলিলের ফটোকপি ও ভাড়ার চুক্তিপত্র
  • হোটেল/রেস্টুরেন্ট/ ক্লাব এর প্রস্তাবিত বার প্রাঙ্গণের খসড়া মানচিত্র তিন কপি
  • সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানে বার পরিচালনার বিষয়ে স্থানীয় মাননীয় সংসদ সদস্যের অনাপত্তিপত্র। সংসদ কার্যকর না থাকলে স্থানীয় ওয়ার্ড কমিশনার বা পৌর চেয়ারম্যানের অনাপত্তিপত্র
  • জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের মতামত (প্রযোজ্য ক্ষেত্রে)
  • ব্যাংক সলভেন্সির সার্টিফিকেট
  • আবেদনকারী সম্পর্কে পুলিশ ভেরিফিকেশন রিপোর্ট
  • প্রতিষ্ঠানটির আশেপাশে কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এবং ধর্মীয় উপাসনালয় থাকবে না
  • প্রস্তাবিত স্থানে বার লাইসেন্স প্রদান করা হলে সংশ্লিষ্ট ভবন মালিক ও ভবনে ব্যবসা পরিচালনাকারী অন্যান্ন ব্যক্তিবর্গের অনাপত্তিপত্র
  •  ফায়ার ব্রিগেড ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের হালনাগাদ নবায়িত লাইসেন্স
  •  মেমোরেন্ডাম অব এসোসিয়েশন এন্ড আর্টিকেল এসোসিয়েশন এর কপি (প্রযোজ্য ক্ষেত্রে)
  •  অডিট রিপোর্ট
  •  ট্রেডমার্ক সনদ (প্রযোজ্য ক্ষেত্রে)

 এছাড়াও

  •  প্রতিষ্ঠানটি যদি হোটেল বা রিসোর্ট হয় তাহলে হালনাগাদ হোটেল লাইসেন্স। এক্ষেত্রে একটা বিষয় লক্ষনীয় হোটেল বা রিসোর্ট টি তিন থেকে পাঁচ তারকা মানের হতে হবে
  • প্রতিষ্ঠানটি রেস্টুরেন্ট হলে রেস্টুরেন্ট লাইসেন্স

প্রতিষ্ঠানটি ক্লাব বা নাইট ক্লাব হলে ক্লাবের রেজিস্ট্রেশন, সাধারণ তথ্যাবলি, ন্যূনতম ২০০ (দুশ) পারমিটধারী মদ্যপায়ীর এবং ক্লাবটিতে ক্রীড়া, শিক্ষা, সাংস্কৃতিক ও সমাজকল্যাণমূলক সম্পর্কিত কর্মকাণ্ডের তথ্য।

আপনারা পুরো প্রক্রিয়াটির একটা সার্ভিস ম্যাপ স্ক্রিনে দেখতে পাচ্ছেন


সেবাটি নিতে আপনার ২ থেকে ৫ বার অফিসে যেতে হতে পারে এবং মোট ২২ টি ধাপ সম্পন্ন করতে হতে পারে।

এখানে আপনারা দেখতে পাচ্ছেন, নম্বর দেওয়া আছে, কোন কোন ধাপে, আবেদনটি কোন কর্মকর্তার কাছে যাবে এবং কত দিন করে সময় লাগবে।

তো যেমন টা দেখছেন, ১৮ নম্বর ধাপে এসে লাইসেন্স অনুমোদন হয়ে গেলে, মন্ত্রনালয় থেকে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের প্রধান কার্যালয় হয়ে, আঞ্চলিক এবং উপআঞ্চলিক অফিসের মাধ্যমে  দাপ্তরিক কার্যসম্পাদন এবং স্বাক্ষরিত হয়ে আবেদনকারিকে লাইসেন্স প্রদান করা হয়। অর্থাৎ অফিসিয়ালি আপনাকে মদ বিক্রির অনুমতি দেওয়া হল।

সেবা প্রাপ্তির শর্তাবলি

 

এখানে কিছু শর্তাবলি আছে, যেগুলো আমি হুবহু কোট করছি-

মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন, ১৯৯০, এক্সাইজ ম্যানুয়াল ভলিউম ২, বিভিন্ন সময় জারিকৃত এসআরও এবং প্রহিবিশন রুলস, ১৯৫০। (গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সংবিধানের ১৮ অনুচ্ছেদে জনগণের পুষ্টির স্তর উন্নয়ন, জনস্বাস্থ্যের উন্নতিসাধন এবং আরোগ্যের প্রয়োজন ব্যতীত মদ্য ও অন্যান্য পানীয় এবং স্বাস্থ্যহানিকর ভেষজের ব্যবহার নিষিদ্ধকরণের জন্য রাষ্ট্রকে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের কথা বলা হয়েছে। বাংলাদেশে শতকরা ৯০ জন মুসলমান বসবাস করে। ধর্মীয়ভাবে মুসলমানদের মদ্যপানকে নিষেধ করা হয়েছে। তৎপরিপ্রেক্ষিতে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন, ১৯৯০ এর বিধানে মুসলমানদের মদ্যপানের বিষয়ে বিধি-নিষেধ আরোপ করা আছে। বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে মদ্যপানের জন্য বার লাইসেন্স প্রদান একটি স্পর্শকাতর বিষয় বিধায় সংবিধানের উক্ত অনুচ্ছেদের নির্দেশনা অনুযায়ী জনগণের স্বাস্থ্য ও ধর্মীয় বিষয়ে সরকার সবসময় সতর্কতা অবলম্বন করে থাকে। তদুপরি মদের লাইসেন্স প্রদানের বিষয়টি খুবই সংবেদনশীল এবং সেমতে দেশে বার লাইসেন্স প্রদানে নিরুৎসাহিত করা হয় । তবে বিশেষ ক্ষেত্রে মন্ত্রণালয়ের অনুমোদনসাপেক্ষে পর্যটনের বিষয়টি বিবেচনায় রেখে পাঁচ তারকা মানের হোটেলে বার লাইসেন্স দেওয়া হয়।)

মদ একটি স্পর্শকাতর বিষয় হওয়ার কারনে বিভিন্ন ক্ষেত্রে আলাদা আলাদা লাইসেন্স প্রয়োজন হয়। যেমন- মদ খুচরা বিক্রির লাইসেন্স, মদ পরিবহনের লাইসেন্স, মদ আমদানি-রপ্তানি এবং উৎপাদনের জন্য লাইসেন্স ইত্যাদি।

আপনারা স্ক্রিনে দেখতে পাচ্ছেন, এই সকল লাইসেন্স পেতে কত দিন লাগে এবং কত টাকা খরচ হয়।

সংশ্লিষ্ট আইন ও বিধি    

এই ভিডীওতে যাই বলা হল এর সবকিছুই, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন, ১৯৯০ এবং মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ বিধিমালা, ১৯৯৯ এবং সরকারি সেবার ওয়েবসাইট ও ইন্টারনেট থেকে সংগ্রিহিত তথ্য। বন্ধুরা আজকের ভিডীও এই পর্যন্তই, এই রকম আরো ভিডিও পেতে চাইলে চ্যানেল টি সাবস্ক্রাইব করে বেল নোটিফিকেশন অন করে দিন। দেখা হবে পরবর্তী ভিডিওতে, সেই পর্যন্ত ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন, আল্লাহ হাফেজ।

পোস্টের বাকী অংশ এবং আরো বিস্তারিত জানতে এই ভিডিয়োটি দেখতে পারেন, ধন্যবাদ।


 

Post a Comment

0 Comments