আমাদের মধ্যে অনেকেই ট্রাভেল এজেন্সি এবং রিক্রুটিং এজেন্সি এই বিষয় দুইটা নিয়ে কনফিউজড হয়ে যান, মনে করেন দুটোই একই কাজ করে, আসলে দুইটার কাজ কিন্তু দুই রকম। ট্রাভেল এজেন্সি সাধারণত দেশ-বিদেশে বিভিন্ন ধরনের ট্যুর, প্যাকেজ টুর আয়োজন করা, এয়ার টিকেটিং, হোটেল বুকিং করা, ভিসা প্রসেসিং, ট্যুর গাইড, ট্যুর প্লানিং অর্থাৎ ভ্রমন সংক্রান্ত সেবা দিয়ে থকে, যদিও ট্রাভেল এজেন্সি এবং ট্যুর অপরেটরের মধ্যে সূক্ষ্ম পার্থক্য রয়েছে।
অন-দ্যা-আদার হ্যান্ড রিক্রুটিং এজেন্সি সাধারনত দেশের মানুষ কে বিদেশে কর্ম-সংস্থানের ব্যাপারে সাহায্য করে থাকে। Litterally speaking বিদেশে শ্রম শক্তি রপ্তানি করে থাকে।
পূর্বের একটি আর্টিকেলে, আপনাদের দেখিয়েছি, কি ভাবে একটা ট্রাভেল এজেন্সির লাইসেন্স এর জন্য সিভিল এভিয়েশনে আবেদন করতে হয়। যারা এখনো দেখন নি, তারা এখানে ক্লিক করে লেখাটি পড়ে আসতে পারে।
আজকের এই ব্লগে কি ভাবে একটা রিক্রুটিং এজেন্সির লাইসেন্স এর জন্য আবেদন করতে হয়, কি কি ডকুমেন্টস্
লাগে, কত টাকা ফিস দিয়ে হয় ইত্যাদি যাবতীয় বিস্তারিত বিষয় সম্পর্কে আলচনা করব।স
রিক্রুটিং এজেন্সির লাইসেন্স প্রদান সংক্রান্ত বিষয়গুলো সাধারনত প্রবাসি কল্যান ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রনালয়ের অধিনে হয়ে থাকে। এই লাইসেন্স পাওয়ার প্রক্রিয়া বেশ জটিল এবং নানান ধরনের ডকুমেন্টস্ দরকার হয়।
কি ভাবে আবেদন করতে হয়-
নির্ধারিত ফর্ম যথাযত তথ্য দিয়ে পূরন করতে হবে।
আবেদনকারি লিমিটেড কোম্পানি হলে উক্ত কোম্পানির আর্টিকেল অফ এ্যাসোসিয়েশন এর কপি, পার্টনারশিপ ব্যবসা হলে পার্টনারশিপ ডিড এর কপি অথবা একক অংশিদার হলে- বিনিয়োগকৃত মূলধনের পরিমান, ব্যবসায়িক পরিকল্পনা ও কর্মসূচি উল্লেখ উল্লেখ করতে হবে।আবেদন ফর্মের সাথে যে সকল সাপোর্টিং ডকুমেন্টস দরকার হয়, সে গুলো হলো-
ট্রেড লাইসেন্স ও টিন এবং ট্যাক্স রিটার্ণ এর সত্যায়িত কপি।
- ব্যাংক সলভেন্সি সার্টিফিকেট।
- পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট।
- নির্ধারিত ফর্ম্যাটে ৩০০ টাকার স্ট্যাম্পে অঙ্গিকার নামা।
আবেদন রিসিভ করার পর সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা ২ মাসের মধ্যে আবেদন পত্রে প্রদত্ত তথ্য এবং সংযুক্ত কাগজপত্র পরীক্ষা-নীরিক্ষা করিয়া সন্তুষ্ট হলে সরকারের নিকট সুপারিশ সহ আবেদন পত্রটি Forward করবেন।
এর পর সরকার পরবর্তী ৩ মাসের মধ্যে আবেদন বিবেচনা করে, আবেদন টি মঞ্জুর বা না-মঞ্জুর করবেন।
আবেদন টি না-মঞ্জুর হলে তা আবেদনকারীকে লিখিত ভাবে জানানো হবে।
আবেদন মঞ্জুর করা হলে সরকার আবেদনকারীকে নির্ধারিত লাইসেন্স ফি এবং জামানতের টাকা জমা দেওয়ার নির্দেশ দিবেন।
টাকা জমা দেওয়ার এবং জমা রশিদ সংশ্লিষ্ট দপ্তরে প্রেরন করার পর, ১ মাসের মধ্যে আবেদনকারীর অনূকুলে লাইসেন্স ইস্যু করা হবে।লাইসেন্স এর প্রত্যেক মেয়াদে রিক্রুটিং এজেন্টকে নূন্যতম ২০০ জন কর্মী বিদেশে প্রেরণ করতে হবে।
একটা রিক্রুটিং এজেন্সি কে ৩ বছরের জন্য লাইসেন্স দেওয়া হয় এবং নির্ধারিত ফিস দিয়ে এই লাইসেন্স প্রতি ৩ বছর পর পর নবায়ন করতে হয়।
লাইসেন্স এর আবেদন ফিস ৫০০ টাকা, লাইসেন্স ফিস ৩ লক্ষ টাকা, জামানত ২০ লক্ষ টাকা এবং ডুপ্লিকেট লাইসেন্স ফিস ৫০০ টাকা। এছাড়া লাইসেন্স নবায়নের আবেদন ফিস ২ হাজার টাকা এবং লাইসেন্স নবায়ন ফিস ১ লক্ষ টাকা প্রযোজ্য। এটা বর্তমান ফিস, সরকার চাইলে যে-কোন সময় এই ফিস এর পরিমান কম-বেশি করতে পারে। তাই আপনারা আবেদন করার পূর্বে হালনাগাতকৃত ফিস এর তালিকা এবং রুলস্-রেগুলেশন দেখে নিবেন।
বৈ-দেশিক কর্মসংস্থান সেক্টরে অনেক ধরনের প্রতারণা এবং দূর্নিতির অভিযোগ রয়েছে। একজন রিক্রুটিং এজেন্ট কে নানান ধরনের শর্ত ও বিভিন্ন আইনি বিধি-বিধান মেনে চলতে হবে, এথিকালি অনেক স্ট্রং হতে হবে, অনেক ট্রান্সপারেন্টলি বিজনেস করতে হবে এবং কোন অবস্থায় অ-বৈধ পন্থা অবলম্বন করা যাবে না। মানুষের জন্য অ-কল্যান হয় এমন কাজ এবং বৈদেশিক কর্ম-সংস্থান সংক্রান্ত আইন এবং দেশের প্রচলিত আইন ভঙ্গ করলে যে-কোন সময় লাইসেন্স বাতিল হয়ে যেতে পারে এবং জরিমানা ও শাস্তির সম্মুখিন হতে পারে।
তো বন্ধুরা আজকের ব্লগ এখানেই শেষ করছি, ইনশাল্লাহ দেখা হবে পরবর্তী ব্লগে, সে পর্যন্ত ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন, শুভকামনা সব সময়।
0 Comments